ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক টুল হল একটি মোবাইল ডিভাইস।এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার হাতে থাকা মোবাইল ডিভাইসের সর্বাধিক ব্যবহার করার ৬ টি কার্যকর উপায়। এখানে আমরা প্রোডাক্টিভিটি থেকে শুরু করে নেটওয়ার্কিং কৌশল সহ আরো বেশ কিছু টপিক নিয়ে আলোচনা করবো।
আমরা জানি যে এমন একটি বিশ্বে বসবাস করি যে এখানে দিনে দিনে আরও বেশি মোবাইল-কেন্দ্রিক হয়ে উঠছে, শুধু একটি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ধারণাটি অনেকের কাছে কঠিন কাজ বলে মনে হতে পারে। চলুন মোবাইল ডিভাইসের সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে ডুবে যাই।
সঠিক স্মার্টফোনটি বেছে নিন : আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করুন সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচনের মাধ্যমে। যদি সঠিক স্মার্টফোন নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আপনার কার্যকরভাবে কাজগুলি পরিচালনা করতে সহজ হবে। আর তা নিশ্চিত করতে বেছে নিন একটি বড় স্ক্রীন, যথেষ্ট স্টোরেজ এবং একটি শক্তিশালী প্রসেসর ওয়ালা একটি ডিভাইস।
শুধু মাত্র একটি মোবাইল ডিভাইসের সাহায্যে ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব নয় যদি না আপনি অবিশ্বাস্যভাবে দক্ষ বা যোগ্য না হন ।তাই সঠিক স্মার্টফোন, সেরা অ্যাপস এবং কার্যকরী কৌশলগুলির সাহায্যে আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফলভাবে পরিচালনা করুন । মোবাইল ফ্রিল্যান্সিং যে সৃজনশীল উপায়ে চিন্তা করতে দেয় এবং স্বাধীনতা অফার করে তা আলিঙ্গন করুন। এতে করে আপনি আপনার কর্মজীবনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবেন
মোবাইল অফিস সেটআপ: আপনার প্রয়োজন অনুসারে একটি মোবাইল অফিস সেটআপ তৈরি করুন।একটি ভালো মানের
ডেস্কটপে সাথে মিল রেখে একটি ভাল মানের ব্লুটুথ কিবোর্ড এবং আপনার ফোনের জন্য একটি স্ট্যান্ডে দাঁড় করে রাখুন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ৬ টি উপায় :
প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপস : কিছু প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপস যেমন Microsoft Office, Google Workspace এবং Trello, Asana বা Notion-এর মতো প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার করুন। ব্যবহার করা শিখুন। এগুলো শিখতে কিছুটা সময় লাগলেও মনোযোগ দিয়ে শিখুন। এতে করে কাস্টমারের সেবা দিয়ে অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ: বর্তমান এ ফ্রিল্যান্সিং জগতে যে সব কাজ রয়েছে তার ভিতরে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কিছুটা একটি পেশা হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং। এই একটি মাত্র কাজ করে অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করতে পারবেন।সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই কাজ টি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে করতে পারেন অনায়াসে। কারণ এই কাজের জন্য একটি মাত্র text editor app থাকলেই চলবে।।আর এই অ্যাপস দিয়ে খুব সহজেই সুন্দরভাবে কন্টেন্ট এর কাজ সম্পাদন করতে পারবেন। আপনার ফোনে নিচের অ্যাপস গুলো ইন্সটল করুন এবং ব্যবহার করুন:
Google docs
Wps office
Microsoft office word
Note pad
ওয়েব ডিজাইনের এর কাজ: ফ্রিল্যান্সিং জগতে আরো কিছু কাজ রয়েছে তা ওয়েব ডিজাইন এর কাজ। এই কাজ টা শিখে খুব সহজেই অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে অধিক পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটা সত্য কথা যে তা হলো আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইন এর কাজ করতে চান তাহলে আপনি শুধু মাত্র বেসিক বিষয়গুলো করতে পারবেন।।যেমন -html , css । আর যদি প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইন করতে চান তাহলে অবশ্যই একটি পিসি বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে। আর আসুন জেনে নেই মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইন এর বেসিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য আপনি Google play store থেকে যে অ্যাপস গুলো ইন্সটল করবেন:
Free code camp
W3schools
Programming hero
Solo Learn
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ:
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন নিজের কাজ সহজ করার জন্য পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখি ঠিক তেমনি অনলাইনের মাধ্যমে এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়।যা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নামে ডাকা হয়। এই কাজ করে মোটামুটি ভালো ইনকাম করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে যারা ব্যস্ত মানুষ , অনলাইনে সময় দিতে পারে না। তারাই মূলত অনলাইনের ছোট বা বড় কাজগুলো সম্পাদন করতে এক বা একাধিক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে। এই ধরনের কাজ গুলো মার্কেটপ্লেসে বেশি দেখা যায়। মজার বিষয় হচ্ছে এই কাজ গুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর কাজ:
ধরুন আপনি একটি ল্যাপটপ কিনবেন বা কিনতে চান। কোন ধরনের চিন্তাভাবনা না করেই কি হুট করে ল্যাবটপ কিনবেন? অবশ্যই না, বরং আপনি অনেক দিক বিবেচনা করবেন।যেমন – কোন কোম্পানির? ,মার্কেট মূল্য কত?, কোয়ালিটি কেমন।ইত্যাদি বিষয় যাচাই বাছাই করবেন।তো এই সব বিষয় জানতে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক অফিসিয়াল পেইজে নক দিবেন। তখন সাথে সাথে আপনার প্রশ্নের উত্তর গুলো সেই ফেসবুক পেজ থেকে অল্প সময়ে জেনে নিতে পারবেন। এখন কথা হলো -আপনি যে উত্তর গুলো জানতে পারলেন সে কথা গুলো আপনাকে কে বলেছে? এই উত্তর গুলো মানুষ হাতে টাইপ করে দিয়েছে।যে এই কাজ করছে তাকে ল্যাপটপ কোম্পানি টাকা দিয়ে রেখেছেন। এখন মজার বিষয় হচ্ছে – আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে এই কাজ করে মোটা অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ:
অনলাইন মার্কেটপ্লেস এ সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ গ্রাফিক্স ডিজাইন। আপনি জানলে অবাক হবেন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মাসিক আয় লক্ষ টাকা। এখন বলতে পারেন যে, গ্রাফিক্স এর কাজ করতে তো অনেক উন্নত মানের ডিভাইস হয়ে থাকে। তাহলে মোবাইল দিয়ে কি ভাবে করবেন? একটু চিন্তা করে দেখুন আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন কে আলাদা একটি সেক্টরে ভাগ করেন তাহলে আপনি অনেক বিষয় পাবেন যা গ্রাফিক্স রিলেটেড।যেমন – logo design, png design, vector design,banner designs ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করতে পারবেন। আর এগুলো আপনি মোবাইল দ্বারা তৈরি করতে পারবেন। এই জন্য আপনাকে বেশ কিছু অ্যাপস বা ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হবে। যেমন –
Pixlab
PicsArt
Canva pro
Camtasia,
Adobe Photoshop touch
এর বাহিরেও আরো অ্যাপস আছে।যেগুলোর মাধ্যমে আপনি মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ করতে পারবেন সহজেই।
আমি কি সত্যিই একটি মোবাইল ফোন দিয়ে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করতে পারব ?
হ্যা! সঠিক টুলস এবং অ্যাপের মাধ্যমে, আপনি আপনার মোবাইল ডিভাইস থেকে সম্পূর্ণরূপে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার পরিচালনা করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা সময় ব্যবস্থাপনা অ্যাপ কি কি?
আপনার কাজের সময় ট্র্যাকিং এবং অপ্টিমাইজ করার জন্য চমৎকার কিছু টুলস /এক্সটেনশন ব্যবহার করতে পারেন ।যেমন – Toggl এবং RescueTime
আমি কীভাবে আমার ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য একটি মোবাইল-বান্ধব পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারি?
আপনার কাজ মোবাইল ডিভাইসে সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য তা নিশ্চিত করতে আপনি ওয়েবসাইট বা পোর্টফোলিও -নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।যেমন – INDmoney , Kuver ,TickerTape
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কিছু নিরাপদ মোবাইল পেমেন্ট কি কি ?
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য PayPal, Venmo, এবং মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপগুলি মোবাইলে পেমেন্ট পাওয়ার জন্য নিরাপদ পদ্ধতি প্রদান করে।
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রয়োজনীয় মোবাইল অ্যাপ কি কি?
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপের মধ্যে রয়েছে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, ক্লাউড স্টোরেজ, কমিউনিকেশন এবং ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ। তারা আপনার ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলিকে স্ট্রিম লাইন করতে এবং আপনার দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
আমার মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার সময় আমি কীভাবে কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখব?
কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে, একটি ডেডিকেটেড ওয়ার্কস্পেস তৈরি করুন, নির্দিষ্ট কাজের সময় সেট করুন এবং সেই সময়ের বাইরে কাজের বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করুন। এটি আপনার ব্যক্তিগত জীবন থেকে কাজকে আলাদা করতে সাহায্য করে।